নিজস্ব প্রতিবেদক: একাধিক মামলায় দ-িত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়ার মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন অভিযোগ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গতকাল রোববার রাতে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে দলটির সভাপতিম-লীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদল গিয়ে লিখিত আবেদনে এ দাবি জানায়। একইসঙ্গে পলাতক তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার না করতে গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
ইসির সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ তাদের আবেদনটি জমা নেন।
পরে লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘রোববার বাংলাদেশের দ-প্রাপ্ত পলাতক আসামি (তারেক রহমান) বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলছেন। এটি নির্বাচনী আইনের সুস্পষ্ট লঙ্গন। সুপ্রিম কোর্টের যে নির্দেশনা আছে, তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য কোনো প্রচারমাধ্যমে প্রচার করা যাবে না। এটি সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ লঙ্ঘন ও আদালত অবমাননার শামিল।’
তিনি বলেন, ‘বিগত দু’দিন ধরে আমরা লক্ষ্য করছি, নির্বাচন সংক্রান্ত যে আচরণবিধি সেটি পদে পদে লঙ্ঘিত হচ্ছে। বিশেষ করে রোরবার দ-িত তারেক রহমান যা করলেন, এর ফলে নির্বাচনী ব্যবস্থাই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘এটিসহ আমাদের লিখিত অভিযোগগুলো কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি। আশা করি, তারা এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, গতকাল শনিবার ঐক্যফ্রন্টের নামে বিএনপি-জামায়াত সুপ্রিম কোর্টের মতো একটি জায়গায় বসে দিনব্যাপী নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে। সেখানে এমন কিছু কথাবার্তা বলা হয়েছে, যা নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই লঙ্ঘনের মাধ্যমে ইতোমধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। এসব যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে নির্বাচন আরও প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে।’
এদিকে তারেক রহমানের ভিডিও কনফারেন্সের ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করলে বিদ্যমান আইন পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল বিকেলে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তথ্য প্রমাণসহ অভিযোগ পেলে আইনের মধ্যে থেকে যদি কিছু থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলব। আর যদি আইনের ভেতর কিছু না থাকে তাহলে আমরা নিজেরা কমিশন বসে কি করতে পারি সেটা পর্যালোচনা করে দেখে তারপরে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
তারেক রহমান যদি দেশে থাকত তাহলে তিনি ভিডিও কনফারেন্স করতে পারতেন কিনা সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হন তাহলে অবশ্যই তা জেলে বা পলাতক থাকার কথা। কেউ জেলে থাকলে এই ধরনের কাজ করার কথা না। জেল থেকে যদি উনি জামিনে আসতেন, তাহলে করলে পরে কোনো অসুবিধা ছিল না। কিন্তু এক্ষেত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আইনের কাভারেজ কতটুকু কি আছে এগুলো দেখে আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর এবং ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর।